সব
সিলেটের জৈন্তাপুরে মসজিদে (মক্তব) পাঠদানের সময় ফ্লাক্সের গরম চা ঢেলে দিয়ে ৭ বছরের শিশুর শরীর পুড়িয়ে দিয়েছে শিক্ষক। বিচার চাইলে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এলাকাবাসী। ইউপি সদস্য জানান আইনের সহায়তা নিতে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
শিশুর মা ও বাবা জানান, মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল অনুমান ৭টায় হেমু তিনপাড়া পশ্চিম মহল্লা জামে মসজিদের মক্তবে যায় জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেপুর (হরিপুর) ইউনিয়নের হেমু মাঝপাড়া গ্রামের এখলাছ উদ্দিনের ছেলে হেমু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র শাহরিয়ার নাফিজ নাবিল (৭)। নাফিজ মক্তবে সহপাঠীর সাথে আলাপ করতে দেখে রেগে গিয়ে মক্তবের পাঠদান শিক্ষক হেমু ভাটপাড়া গ্রামের সমছুল হক উরফে বড়হুনার ছেলে দারুল উলুম হেমু মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল করিম (২৭) ফ্লাক্স হতে গরম চা এনে শিশুর শরীরে ঢেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির শরীর পুড়ে যায়। এই অবস্থায় মক্তবের অন্যান্য ছাত্ররা শিশুটিকে বাড়ী পৌঁছে দেয়।
এদিকে নাফিজের বাবা এখলাছ উদ্দিন চাকুরীর সুবাদে হবিগঞ্জের সিরামিক কোম্পানিতে থাকায় তার স্ত্রীকে বিষয়টি কাউকে না জানাতে চাপ প্রয়োগ করে এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার পর স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে স্ত্রী শিশুটিকে স্থানীয় ফার্মেসীতে চিকিৎসা দেন এবং স্বামী এখলাছ মিয়াকে কে খবর দেন। খবর পেয়ে স্বামী ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে বাড়ী ফেরেন এবং শিশু নাফিজের অবস্থা দেখে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার বিষয়ে জানতে মসজিদে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান সেই শিক্ষক এখনও পাঠদান করছেন। তাই বিষয়টি গ্রামের মুরব্বীদের জানালে এখলাছকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমক প্রদান করে এবং ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। নিরুপায় হয়ে এখালাছ বিষয়টি ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল কাহির পঁচা মিয়া শিশুটির অবস্থা দেখে তিনি তাদেরকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন।
শিশুর পিতা আরও জানান, মক্তবের পাঠদান শিক্ষকের এমন আচরণ দেখে কোন পিতা-মাতা তা মেনে নিতে পারবে না, শুধু মাত্র মক্তবের শিক্ষক নন তিনি অত্র এলাকার দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম হেমু মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। তার কাছ থেকে শিশু নির্যাতন করা আমি আশা করিনি। বর্তমানে আমার ছেলেটিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছি চিকিৎসা কাজ শেষে আমি থানায় মামলা দায়ের করব।
বিষয়টি জানতে এলাকার অনেকের সাথে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন গত মঙ্গলবার মসজিদের মক্তবের শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি।
এবিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন আলী বলেন, শিশু নির্যাতনের বিষয় নিয়ে কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। যদি অভিযোগ আসে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি