সব
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ৫নং ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষকে জিম্মি করে নির্ধারিত ফি চেয়ে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উদ্যোক্তা শামীম আহমদ ও তার দুই ভাই সাজু আর শাফীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, ৫নং ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের যাত্রা শুরুর পর থেকে উদ্যোক্তা একই ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা কালা মিয়া (মধুর আলী)’র ছেলে শামীম আহমদ ও তার দুই ভাই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়নের জনসাধারনের মাঝে ডিজিটাল তথ্য ও সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তা যেন রাঘব বোয়াল গিলে খাচ্ছে। জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, ভিজিডি র্কাডের আবেদনের জন্য, অতিরিক্ত টাকা আদায়, অসম্পূর্ণ কাজ, অদক্ষতা সহ সেবা কেন্দ্রে সঠিকভাবে সময় না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকার কারনে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র থেকে সেবার বিনিময়ে মিলছে অতিরিক্ত ফি সহ হয়রানি। জরুরি প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে এসব অনিয়ম সহ্য করছেন এলাকার সাধারন মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উদ্যোক্তা শামীম আহমদ ও তার দুই ভাই সাজু ও শাফি ইউনিয়নের সাধারন মানুষের কাছে সেবার নামে বাজারের সাধারন কম্পিউটারের চেয়ে বেশী টাকা আদায় করছে। যদি কোন সেবা গ্রহীতা অতিরিক্ত টাকা দিতে আপত্তি জানায় তাহলে তাকে তাড়িয়ে দেয়। জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম নির্ধারিত ২৫-৫০ টাকার বদলে নেওয়া হচ্ছে ২৫০টাকা, জরুরি প্রয়োজনে কেউ জন্ম সনদ নিতে চাইলে ফি গিয়ে ধারায় ৩০০ টাকা। জন্ম সনদের ভুল সংশোধন করতে আসা সাধারণ জনগণকে হয়রানি করে তার পর অতিরিক্ত ফি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সরকারী নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ইউনিয়ন পরিষদের কমিাপউটার ও ওয়াই ফাই দিয়ে চলছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষন দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা।
নুর উদ্দিন মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি বলেন আমি হরিপুরে জন্মগ্রহন করেও আমার ছেলে ও মেয়ের জন্ম নিবন্ধন করতে পারলামনা। তিনি আরোও বলেন ২০০৮সালে চাকুরীর সুবাদে জৈন্তাপুরের নিজপাট ইউনিয়নের ভোটার হয়েছিলেন আর ২০১০সালে চাকুরী ছেড়ে বাড়ীতে থাকলেও আইডি র্কাড স্থান্তর করেননি এই এক ভূলের মাসুল হলো তার সন্তানরা হরিপুরে জন্মগ্রহন করে এবং সেখা তারা টিকাসহ সরকারী সব সুযোগ সুবিধা পেলেও বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জন্মনিবন্ধন ছাড়া ভর্তি করতে পারলেন না, গেলেন ইউনিয়ন তথ্যসেবায় গেলে তারা যা যা বল্ল সব দিলাম কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানা নিজপাট থাকায় জন্মনিবন্ধন দেয়নি তারা। এই অবস্থায় মেয়ে ও ছেলেকে ২বছর ধরে স্কুলে ভর্তি করতে পারেননি, তাদের জীবন আজ ধ্বংসের পথে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, বাচ্চাদের জন্ম সনদের জন্য ২৫০ টাকা নিচ্ছে, জন্ম সনদ ডিজিটাল করতে ১৫০-২০০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, নাগরীকত্ব সনদ ৫০ টাকা ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে ১৫০-২০০ টাকা জন্ম সনদ সংশোধন তাদের কাছে নাকি হয়না। তাই সে আমাকে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে তিনি শামিমকে কলদিয়ে বলেছেন তাই আমি আবার এখানে এসেছি। এক পরিবারের ৩জন কর্মকর্তা বসে তাদের ইচ্ছা মতো সাধারণ নাগরিকের কাছ থেকে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ছাত্রদের শিখাচ্ছে কম্পিউটারও। দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন তারা।
ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা শামীম আহমদ এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জন্মসনদ করতে ১৪০ টাকা নেই অন্য কিছু জানতে চাইলে সরাসরি দেখা করার কথা বলে মোবাইল রেখে দেন।
এ বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, তথ্য কেন্দ্র আমাদের আওতায় নয় এটার দায়িত্ব আমার কাছে নয়। সে যা ইনকাম করে এটা তার এ ব্যাপারে আমি তাকে কিছু বলিনা। তার পরও অতিরিক্ত টাকা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষনের ব্যাপারে আমি তদন্ত করবো।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আজমেরী হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ তথ্য কেন্দ্রে জন্ম নিবন্ধন সহ অন্যান্য কার্যক্রমে সরকার নির্ধারিত ফির বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। আমাকে কেউ কখনো অভিযোগ করেনি ও জানায়নি, যেহেতু বিষয়টি এখন জেনেছি তাই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি