সব
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বে কোনও ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি। তবে আজ (সোমবার) ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের মানবদেহে পরীক্ষার প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে।
কিন্তু কখন জানা যাবে এই ফল?
আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন চ্যাডক্স-১এনকোভ-১৯ এর প্রথম ধাপের ফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে অক্সফোর্ড।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এই ভ্যাকসিন আদৌ সফল হবে কিনা তা জানতে ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলে ব্যাপক পরিসরে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে মানবদেহে প্রথম ধাপের পরীক্ষায় ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করে কিনা সেটি আজ আরও পরের দিকে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে এক নিবন্ধে জানাবেন অক্সফোর্ড বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছরের মাঝের দিকে হয়তো যেকোনও একটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিস্তৃত পরিসরে সহজলভ্য হতে পারে। সাধারণত যেকোনও ভ্যাকসিন তৈরি এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কয়েকবছর এমনকি কয়েক দশকের দরকার হয়। তবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন যদি সফল হয় তাহলে সেটি হবে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার।
গত ১৫ জুলাই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী দল বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকীতে এর ফল প্রকাশের অপেক্ষা করছেন। তবে এ বিষয়ে আর কোনও বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।
র আগে, অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, তারা ভ্যাকসিনটির সফলতার ব্যাপারে ৮০ শতাংশ আশাবাদী। যদি সফল হয় তাহলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই মানুষের শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ শুরু করা যেতে পারে।
কি ধরনের ফল আশা করা হচ্ছে?
অক্সফোর্ডের জ্যেষ্ঠ একটি সূত্র ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভ্যাকসিন নেয়া স্বেচ্ছাসেবীদের দেহ থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষায় দেখা গেছে- এটি দেহে অ্যান্টিবডি এবং ‘কিলার টি-সেল’ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে।
অন্য একটি সূত্র শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাজনিত কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটিকে ‘দ্বৈত প্রতিরক্ষা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এদিকে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলে ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে ১০ হাজার মানুষের দেহে তা প্রয়োগ করবে অক্সফোর্ড। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজার ও ব্রাজিলে ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে ভ্যাকসিনটি দেয়া হবে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, চলতি বছরের শেষ দিকে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতার ব্যাপারে তারা চূড়ান্ত তথ্য-উপাত্ত পাবেন বলে আশা করছেন। বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের অন্তত দুই ডজন ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া আরও দুই শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির বিভিন্ন ধাপে রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, টেলিগ্রাফ, দ্য সান।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি