সব
‘নির্বাচনী প্রচারণা দলের প্রভাবশালী নেতারা লোক দেখানোর জন্য এসেছেন, সেলফি তুলেছেন, আবার চলে গেছেন। এটাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। তারা নৌকার পক্ষে কাজ করেননি। সবার সামনে তারা দেখিয়েছেন নৌকার পক্ষে তারা আছেন। কিন্তু তারা বিদ্রোহীদের সাথে ছিলেন।’ কথাগুলো বললেন গোলাপগঞ্জ পৌরভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহেল আহমদ।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পৌর এলাকার নিজ বাড়িতে গোলাপগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যখন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন গত নির্বাচনে যারা দলের বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করেছেন ও বিভিন্ন কারণে যারা এলাকায় বিতর্কিত তারা কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হবে না। তখন উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পরামর্শ নিয়ে আমি মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করি। মনোনয়ন পেতে কোন ধরনের লবিং তদবির করিনি। শুধু আমি নই এবার যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন তদবির লবিংয়ের কোন সুযোগ ছিলনা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন। পরবর্তীতে নিজেদের মনোনয়ন না পাওয়ার কারণ হিসেবে দুই বিদ্রোহী প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়ে জনগণ কে বিভ্রান্ত করেছেন। তারা আসল সত্য জানতেন যা গোপন করেছেন, তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন। আজকে শুধু মনোনয়ন না পাওয়ায় নৌকার বিপক্ষে নেত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছেন। যা নৌকার পরাজয়ে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল।
রুহেল আরও বলেন, নির্বাচনে সময় মাত্র এক মাস সময় পেয়েছিলাম। নির্বাচনী কাজে জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই একজন নেতাদের পেয়েছি। প্রভাবশালী দু’এক নেতা বিশাল অংকের টাকা বিনিয়োগ করেন নৌকাকে আটকানোর জন্য। সর্বোপরি দলীয় অনেক নেতাদের অসহযোগিতা নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। এমনকি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নামমাত্র ছিল। নির্বাচনের দিন দুই চারজন আওয়ামীলীগ নেতা ছাড়া আর কাউকে পাইনি। মনোনয়ন দলীয়ভাবে দেওয়া হলেও ব্যক্তির উপর টার্গেট করা হয়েছিল। অনেকেই দল করে টাকা বানালেও তা দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নিজের এলাকার ভোটারদের গোছিয়ে আনলেও আমার অজান্তে এলাকায় ভোটের আগে পুলিশী তল্লাশি করা হয়, যা আমার ভোটে নেগেটিভ এফেক্ট করেছে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমার নির্বাচনী ব্যানার- পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পক্ষ থেকে আমাকে নানা হয়রানী করা হলেও আমি থানা কিংবা নির্বাচন কমিশনে কোন অভিযোগ করিনি। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রার্থী নির্বাচন ভুল বলে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমি প্রার্থী নতুন হতে পারি, কর্মী নতুন নয়। দুই যুগের অধিক ক্যারিয়ার আছে আমার রাজনীতিতে। আজকে যারা নৌকা পরাজয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে মায়া কান্না করছেন তারা সত্যিকারের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী হলে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে, আদর্শ না বিকিয়ে নৌকার প্রতি বিরাগভাজন হতো না, নৌকার পক্ষে কাজ করে যেতেন।
রুহেল আহমদ বলেন, আমার ভুল হতে পারে, সামনের দিনে ভুলগুলো শুধরে এগিয়ে যেতে চাই।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পৌর আওয়ামী লীগকে গোছানো বা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতিকে বার বার তাগদা দিয়েছিলাম। তিনি কোন ধরনের কর্ণপাত করেননি। যা জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অবহিত আছেন। আগামীতে পৌর আওয়ামী লীগে সত্যিকারের কর্মীরাই স্থান পাবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে দলীয় অসহযোগিতা যেমন ছিলো তেমনি নানা গুজব, অপপ্রচার অপরাজনীতি ও ব্যাপক টাকা ছড়াছড়িই নির্বাচনের পরাজয়ের কারণ যা আমি সামাল দিতে পারিনি।
তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানান, কেন্দ্র জানতে চেয়েছে, শীঘ্রই পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে দলীয় কার্যক্রম সম্পর্কে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি