সব
বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম উজ্জ্বল ব্যাক্তিত্ব, ঔপন্যাসিক দেবেশ রায় মারা গেছেন। কিংবদন্তি এ লেখক তেঘরিয়া অঞ্চলের ঊমা নার্সিংহোমে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে মারা যান।
তার ঘনিষ্ঠজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কবি শামীম রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, বুধবার দেবেশ রায়কে তেঘরিয়া অঞ্চলের ঊমা নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থা সঙ্কটজনক হলে চিকিৎসকরা তাকে বৃহস্পতিবার কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেন। তবে এতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাঁক বদলের এ লেখক।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এই সাহিত্যিক। ভার্টিগোজনিত সমস্যার কারণে শারীরিক ভারসাম্যে অভাবেও ভুগছিলেন তিনি। বুধবার পানিশুণ্যতার সমস্যা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। জানা গেছে, দেবেশ রায়ের ছেলে তার স্ত্রীসহ ভারতের আমেদাবাদে থাকেন। দেশটিতে লকডাউন থাকায় মৃত্যু সংবাদ পেলেও তারা দ্রুত কলকাতায় পৌঁছাতে পারছেন না।
দেবেশ রায়কে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের ছকভাঙা ঔপন্যাসিক। তার বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গ এলাকায়। বিশ্ববিদ্যালয় সময় থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির সূত্রেই চষে ফেলেছেন তামাম উত্তরবঙ্গ। শিখেছিলেন রাজবংশী ভাষা। কলকাতা শহরেও ট্রেড ইউনিয়ন করতেন, ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল শ্রমিক সমাজের সঙ্গে।
‘আহ্নিক গতি ও মাঝখানের দরজা’, ‘দুপুর’, ‘পা’, ‘কলকাতা ও গোপাল’, ‘পশ্চাৎভূমি’, ‘ইচ্ছামতী’, ‘নিরস্ত্রীকরণ কেন’, ও ‘উদ্বাস্তু’— এই আটটি গল্প নিয়ে দেবেশ রায়ে র প্রথম গল্পের বই বের হয়। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি এক দশক পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তার প্রথম উপন্যাস যযাতি। দুই বাংলার বিখ্যাত উপন্যাস তিস্তাপারের বৃত্তান্ত।
১৯৯০ সালে এই উপন্যাসের জন্যেই দেবেশ রায় কলকাতার সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। তিনি বাংলাদেশেও ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। এখানকার অনেক লেখক তার সাহিত্য ও সাহিত্য তত্ত্ব দিয়ে প্রভাবিত হন। বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত ছিল দেবেশ রায়ের। এখানকার তরুণ লেখক-কবিদের সঙ্গেও তার ছিল ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি