সব
কর্মবীর মানবিক ডা.জসিম উদ্দিন শরিফী দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের খুদিরাই গ্রামের সন্তান। বাবা মরহুম শরীফ উল্লা। পরিবারের মেঝো ছেলে তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এমবিবিএস পাশ করেন জসিম। ২০১০ সালে ২৮তম বিসিএস এর মাধ্যমে ক্যাডার অফিসার হিসাবে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন। ২০১৮ সালে ষষ্ট গ্রেডে পদোন্নতি পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায়। এই অল্প সময়ে কর্ম, নিষ্ঠা আর দায়িত্বশীল আচরনে জনবান্ধব কর্মর্তার পাশাপাশি একজন মানবিক ডাক্তারের সুনাম অর্জন করেন ডা. জসিম।
সারা পৃথিবীর ন্যায় চলতি বছরে মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে করোনাভাইরাস হানা দেয় বাংলাদেশে। ১২ ই এপ্রিল সুনামগঞ্জে ১ম এবং ২৩ এপ্রিল দক্ষিণ সুনামগঞ্জে করোনা রোগী সনাক্ত হয়। প্রার্দুভাব নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা করোনা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাস্থ্য বিভাগ। দায়িত্ব পালন ও রোগীর সেবা প্রদানে শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শতাধিক ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হন।
কোভিট-১৯ সংক্রান্ত কাজের এ-টু-জেড দেখভাল করছেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ও উপজেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা.জসিম উদ্দিন শরিফী। উপজেলার কভিড ১৯ বিষয়ক সব কিছুই তাঁর নখদর্পণে। দিন রাত যখন-তখন এ বিষয়ে মিডিয়াসহ সকল পর্যায়ে তথ্য প্রদান ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মানবিক এই ডাক্তার। করোনা ভাইরাস এর উপসর্গযুক্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে পজিটিভ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, হোম আইসোলেশন ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, জনগনের সচেতনতার জন্য স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান করাসহ জটিল রোগীদের রেফার করা ও আপদকালীন সময়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সহায়তায়। আর এ সকল কাজ করতে যেয়ে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডা.জসিম অসুস্থ হয়ে পড়েন।
করোনার এই মহামারীর যুদ্ধে সেবা দিতে গিয়েই আক্রান্ত হন তিনি। যা উপজেলার সচেতন মহলের হৃদয় নাড়া দেয়। সকলের দোয়া আর্শিবাদ আর করোনা চিকিৎসা নির্দেশনা মানার ফলে করোনা জয় করেন ডাক্তার জসিম। এই যুদ্ধে আবারও বীরের বেশে আগমন মানবিক এই ডাক্তারের। ডা.জসিম বলেন “জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে প্রচন্ড জ্বর,কাশি ও শরীর ব্যথা শুরু হয়। সহকর্মী চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড ১৯ এর জন্য নমুনা দেই। ১২ জুলাই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। লক্ষণ থাকায় আমি আইসোলেশনেই ছিলাম। ১৩ জুলাই কাশি মারাত্মক আকার ধারণ করে সাথে কিছুটা শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। সিলেট শহীদ সামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যানসহ আরো কিছু পরীক্ষা করালে রিপোর্ট আসে করোনা ভাইরাস এর কারণে নিউমোনিয়া দেখা দিয়েছে। এরপর আল্লাহর অশেষ রহমতে,ওখানকার চিকিৎসক ও স্টাফদের আন্তরিক সেবায়,আমার বন্ধু বান্ধব,আত্বীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খীদের দোয়ায় জুলাই ২৩ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাই।
২৭ ও ২৮ জুলাই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এখনো চিকিৎসকদের পরামর্শে কিছু ঔষধ চলছে। তবে উপজেলার করোনা সংক্রান্ত কাজসহ স্বাস্থ্য প্রশাসনের কাজে আবারো আত্মনিয়োগ করেছি। করোনা নিয়ন্ত্রণে এখনকার করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন “আমাদের সচেতন হতেই হবে,এর কোন ও বিকল্প নেই,সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহ বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে”,”সহসাই হয়তো করোনা বিদায় নিচ্ছে না,তাই আমাদের এই নিউ নরমাল লাইফে অভ্যস্ত হতে হবে। সদালাপি এই চিকিৎসক এর করোনামুক্তিতে স্বাস্থ্য প্রশাসনসহ উপজেলার সকল বিভাগে স্বস্তি ফিরেছে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,মিডিয়াকর্মীসহ উপজেলার সকলেই মানবতাবাদী এই ডাক্তার এর ফিরে আসাতে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি