করোনাকালে বিশ্বনাথের ঈদ!

কামাল মুন্না, বিশ্বনাথ;
  • প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২০, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

ঈদের দিন ছুঁইছুঁই। মনের ভিতর অনেক আনন্দ। পাড়া-প্রতিবেশীর ঘরে যাওয়া-খাওয়া, বড়দের সালাম করে ইনাম পাওয়া, হাসি-আনন্দ পাওয়া আরো অনেক কিছু…! এসব এখন অতীত! একদিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, অন্যদিকে তৃতীয় দফায় বন্যার আক্রমণ। তবুও মানুষ ঈদ উদযাপন করবেন বলে ঈদের আমেজকে মনে পুষে রেখেছেন। স্থবির সারাবিশ্ব করোনাভাইরাসের এই মহামারিকে মোকাবেলা করে ঈদ উদযাপনে স্বচেষ্ট রয়েছে। এর ব্যতিক্রম নয় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীও। এদিকে বিত্তবানরা ঈদে নতুন জামা গায়ে পড়তে শিশু-যুবা সব বয়সের মানুষ এখন মার্কেটিং নিয়ে ব্যবস্ত। জমে উঠেছে উপজেলার ছোটবড় শপিংমলগুলো। কিন্তু করোনাকালে কর্মহীন হয়ে থাকা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের ঈদ অন্যরকম বিষাদময়। তাদের পরিবারে খাবার নেই আর ঈদ! তবুও ঈদ করতে হবে।

তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মানছেন না। এতে ঈদ পরবর্তীতে করোনার আশংকা থেকেই যায় বলে সচেতন ও বিজ্ঞজনেরা মনে করছেন। এপর্যন্ত বিশ্বনাথ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪৫জন আর সুস্থ্য হয়েছেন ১০৬ জন।
ঈদের কেনাকাটা করতে আসা তারেক নামের একব্যক্তি জানান, পরিবারের সবাইকে নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে বিদেশ দেশে বড় ভাই টাকা দিয়েছেন। তাই সবার জন্য তিনি কিনেছেন। আর কর্মহীন জামাল উদ্দিন নামের ব্যক্তি জানান, ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেতন। দীর্ঘদিন ধরে করোনার প্রাদুর্ভাব থাকায় তিনি কর্মহীন রয়েছেন। গেলো ঈদ এবং কোরবানী ঈদ বলতে তার সংসারে আসবেনা।
করোনাকালে বিশ্বনাথের ঈদ নিয়ে উপজেলার রাজনীতি, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সচেতন মহল, বিজ্ঞজন, ও কর্মহীনদের সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের মতে এবারে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা বা কোরবানীর ঈদ ভিন্নভাবে মানুষ উদযাপন করবেন।

সিলেট-২ আসনের (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, একদিকে করোনা অণ্যদিকে বন্যা এই পরিস্থিতে আমরা ঈদ উদযাপন করতে হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনানুযায়ী শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা মাঠে ঈদের জামাত না পড়ে মসজিদের ভেতরে জামাত আদায় করুন। নিজে এবং সবাইকে রক্ষা করা আমাদের সকলেরই কর্তব্য।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এমএম নুনু মিয়া বলেন, এই মহামারিতে পবিত্র ঈদ উদযাপন করবে সারাবিশ্বের মুসলিম। আমরাও করব। তবে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে করমর্দন, কোলাকুলি না করে আনন্দ ভাগাভাগি করতে হবে। কোরবানীর পশু জবাই করে মাংশ কাটতে ২/১ জনের অধিক মানুষ যেন না থাকেন সে বিষয় নজর দিতে হবে। কোরবানীর পশুর বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলার কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত পৌরপ্রশাসক মো. কামরুজ্জামান বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সবাইকে সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানীর পশু জবাই করতে হবে। যাতে করে ওই বর্জ্য দ্বারা কোন সংক্রমন না ছড়ায় সেজন্য পশুর রক্ত বা বর্জ্য উপজেলা ও পৌরবাসীকে নির্ধারিত স্থানে ফেলতে বলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ পংকি খান বলেন, করোনায় বিশ্ব বা দেশের তুলনায় বিশ্বনাথে এত মহামারি নয়। যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন শগভাগ স্থস্থ্য হয়েছেন। তবে স্বাস্থবিধি মেনে ঈদ হবে ঈদের মত। জামাত এবং কোরবারীন নিয়মমত পালন করা হবে।
কলামিষ্ট ও কবি সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, এখনও মানুষ করোনায় বিপর্যস্ত। এখনও মানুষ ঈদ করার চেষ্টা করের। তবে করোনা মেকাবেলায় মূল বিষয় হচ্ছে স্বাস্থবিধি মানা। সেটা মানুষ মানছেন না। এভাবে চললে ঈদের পরে করোনার আশংকা থেকেই যায়।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি