সব
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চৈত্রঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নাজমুল হত্যা মামলার আরও ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ বি এম মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগীতায় তাদেরকে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ঢাকার কমলাপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মামলার প্রধান আসামি তফাজ্জুল আলী (৩৫) এবং তার সহযোগী খালেদ মিয়া (৫৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুবাই যাওয়ার এমিরেটস এয়ারলাইন্সের টিকেট ও তফাজ্জুল আলীর পাসপোর্টসহ মোবাইল, সিম ও দেশি-বিদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তফাজ্জুল আলী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, ২/৩ মাস আগে থেকেই নাজমুলকে নজরদারি করা হয়।
নিহত নাজমুল ২০২০ সালের ২ জুন প্রতিপক্ষ জুয়েলের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে পঙ্গু করে দেন। তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে এজাহারভুক্ত ৩ আসামিসহ ৪ জন জন গ্রেপ্তার হলেন।
এর আগে সোমবার রাতে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গত সোমবার রাতে রাজনগর উপজেলার একটি গ্রাম থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত একটি রাম দা ও একটি চাইনিজ কুড়াল। আর গাড়িচালক আমিরকে মৌলভীবাজার সদর থেকে মাইক্রোবাসসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
নাজমুল হত্যার একটি সিসিটিভি ফুটেজ মঙ্গলবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, কালো একটি মাইক্রোবাসে করে এসে ৯ ব্যক্তি নাজমুলকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে নিজের বাড়ির সামনে এসে মাটিতে পড়ে যান তিনি। এ সময় নাজমুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যান ওই ৯ জন।
সিসিটিভি ক্যামেরাটি নাজমুলের অফিসে লাগানো ছিল।
গত রোববার বেলা ২টার দিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত নাজমুলকে সিলেটের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে নাজমুল জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের মধ্যে চারজনকে চিনতে পেরেছেন তিনি। তারা হলেন- স্থানীয় তোফায়েল, রাসেল, মাসুদ ও তোফাজ্জল। এ সময় তিনি দাবি করেন, ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে লড়তে চাওয়ায় তার ওপর হামলা হয়েছে। তার মৃত্যু হলে খুনিদের যেন সাজা হয় সেই আহ্বানও জানিয়েছিলেন নাজমুল।
নাজমুলের মৃত্যুর পর তার বড় ভাই শামছুল হক গত সোমবার তোফাজ্জলকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮/১৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, মামলায় তোফাজ্জলকে প্রধান আসামি করা হলেও প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে জুয়েল মূল পরিকল্পনাকারী। এলাকার আধিপত্য ও বালুমহাল নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হয়েছেন নাজমুল।
রহিমপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নাজমুলের বিরুদ্ধে থানায় ১৫টি মামলা ছিল জানিয়ে ওসি বলেন, নাজমুলকে হত্যায় জড়িত অন্য আসামিদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি