ওসমানীনগরে ফাইজা হত্যা: ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম

ওসমানীনগর প্রতিনিধি ;
  • প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২১, ৮:৫১ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

সিলেটের ওসমানীনগরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফাইজা ‘হত্যা’য় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এলাকাবাসীর আয়োজনে রবিবার দুপুরে উপজেলার সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তাজপুর বাজারে এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিশু ফাইজার মা, বাবাসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় কান্নায় মহাসড়কেই লুঠিয়ে পড়েন শিশুর মা লায়লা বেগম ও বৃদ্ধ নানী করফুল বিবি।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দশ বছরের শিশু ফাইজাকে ধর্ষণ করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাতদিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মানববন্ধনে খাসদরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা ‘হত্যা’য় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম প্রদান করেন।

এর মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা না হলে আগামী মঙ্গলবার আবারও প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন উপস্থিত এলাকাবাসী।

শিশুর মা লায়লা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে ঘাতকরা লাশ ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে রেখে তারা গাঁ ডাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তখন আমি বাড়িতে এসে পড়ায় ঘাতকরা দ্রুত লাশ নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই রাতে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ভাসুরদের তিন পুত্রকে আটক করে। পরদিন আটকৃতদের অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও থানা পুলিশ আমার অভিযোগটি আড়াল করে তাদের ছেড়ে দিয়েছে। শিশুর পরিবারের দাবি, ওসমানীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে চাইলেও থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা রুজু করে। পরিকল্পিত ভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এটি আত্মহত্যা নয়। লাশের গাঁয়ে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য থানা পুলিশের কাছে করঃজোরে মিনতি করেও কোনো কাজ হয়নি।

মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনোরুদয় পাল ঝলক, যুক্তরাজ্য মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সল হোসেন সুমন, ইউপি সদস্য খালেদ আহমদ খুকু, মহিলা ইউপি সদস্য নেয়া বিবি, আওয়ামী লীগ নেতা খালিক মিয়া, আব্দুল কালাম, শিশু ফাইজার নানী করফুল বিবি, মামা মনছুর আলী, ফুফাত ভাই আব্দুল বাছিদ, বকুল মিয়া, আনসার ভিডিপির তাজপুর ইউনিয়ন লিডার হেপি বেগম, এছাড়া স্থানীয় আফছার মিয়া, রেজন মিয়া, আপ্তাব উদ্দিন, আব্দুর রঊফ, পংকি মিয়া, রহিমা বেগমসহ এলাকার প্রায় দুই শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামে শিশুর পিতা তুরণ মিয়া অন্যত্র কাজে থাকাবস্থায় বিকেলে মা লায়লা বেগম ফাইজাকে ঘরে রেখে ছোট ছেলেকে নিয়ে বাজারে যান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়িতে ফিরে বসত ঘরের বাঁশের তীরের সাথে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় শিশুর মা লায়লা বেগম চিৎকার শুরু করলেও তারা দ্রুত ফাইজাকে নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বুধবার ফাইজার নানার বাড়িতে লাশের গোসল ও প্রথম জানাযার নামাজের পর ওই দিন রাত সাড়ে ৭টায় উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে শিশুর লাশের দাফন সম্পন্ন হয়।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি