ওসমানীনগরে করোনা পরিস্থিতি বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

শিপন আহমদ,ওসমানীনগর;
  • প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২:৩৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

সিলেটের ওসমানীনগরের ছোট-বড় বাজারগুলোতে করোনার অযুহাতে কারণ ছাড়াই হু হু করে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম। বিশেষ করে লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না চাল ও পেঁয়াজ বাজারের। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে চালের দর বস্তা প্রতি দুই থেকে চারশত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে কেন বাড়ছে দর এর কোন কারণ জানে না কেউ। এমনকি বিষয়টি প্রশাসনের নজরেও নেই। মূল্য বৃদ্ধির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। এছাড়াও বেড়েছে নিত্য পণ্য পিঁয়াজ, রসুনসহ অনেক কিছুর দর। জিনিসের মূল্য লাগামহীন হওয়ায় বিপাকে নিম্ন আয়ের লোকজন।

গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত হারে পেঁয়াজ ও চালের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার অভিযান পরিচালনা করতে দেখা না গেলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক প্রান কেন্দ্র গোয়ালাবাজারের একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মচারীরারা বাকিতে খরছ করে টাকা পরিশোধে করছেন টালবাহানা।

এ ক্ষেত্রে তারা বাজার মনিটরিং অভিযানের ভয় দেখিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীদের। সরেজমিনে বাজার এলাকায় গেলে সাংবাদিকদের কাছে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মরতদের কাছে পাওনা টাকা আদায় না করতে পারা নিয়ে ক্ষোভের সাথে এমন মন্তব্য প্রকাশ করেন ভোক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।ক্রেতাদের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের দায়সারা ভাব ও সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং না করায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রেতারা ইচ্ছা মতো দাম নিচ্ছেন।

জানা যায়, ওসমানীনগরে হঠাৎ করে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। কোন কারণ ছাড়াই বাড়তে শুরু করেছে সব ধরণের চালের দর। গত মাসে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মোটা চাল ১৬-১৭ শ’ এবং চিকন চাল ২১-২২ শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বস্তা প্রতি ২-৪ শ টাকা বেড়ে গিয়ে মোটা চাল ২ হাজার এবং চিকন চাল আড়াই হাজার টাকায় দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি বিক্রেতারা হঠাৎ করেই বাড়িয়ে দিয়েছে চালের দর। যার কারণে খূচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। এমন অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। শুধু চাল নয়, প্রায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দর বেড়ে দ্বিগুন হয়ে গেছে। ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে স্থানভেদে ৪০-৫০ টাকা দরে। কেজিতে ৩০-৪০ টাকা করে বেড়েছে রসুনের দরও। ৫০ টাকার রসুন স্থান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। বেড়েছে আলুসহ সব ধরণের সবজির দরও। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার সঠিকভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গোয়ালাবাজারে ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। এছাড়া মফস্বলের বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা দরে। একই অবস্থা পেঁয়াজের ক্ষেত্রে। দোকানগুলোতে মূল্য তালিকা থাকার কথা থাকলেও তাও রাখছেন না ব্যবসায়ীরা।

অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন বিভিন্ন সময়ে উপজেলার নিকটবর্তী বাজারগুলোতে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও মফস্বলের বাজারগুলোতে কখনো যেতে দেখা যায়নি। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর সখ্যতা রযেছে। অভিযানের পূর্ব মুহুর্তে এসব ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয়া হয় বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। অভিযানকালে এসব ব্যবসায়ীরা পণ্যেও দর কমিয়ে দিতে দেখা যায়।

ফলে অভিযানের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যায়। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী। প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী গোয়ালাবাজার ও তাজপুরের কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বাকীতে সদাই নিয়ে অভিযানের ভয় দেখিয়ে টাকা পরিশোধ করছেন না বলেও অভিযোগ একাধিক ব্যবসায়ীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়ালাবাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, উপজেলা প্রশাসনের নাজির প্রভাংশু বাকীতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার টাকার সদাই নিয়ে টাকা পরিশোধ করছেন না। পাওনা টাকা পরিশোধের কথা বললে তিনি নানা টালবাহানা করছেন। অভিযানের ভয়ে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারছি না।

পান দোকানী সঞ্জিব দেব হঠাৎ করে চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দর বেড়ে যাওয়ায় আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। দিনমজুর মানিক মিয়া বলেন, বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজ রসুনের দর বেড়ে যাওয়ায় আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ তাহমিনা আক্তার বলেন,এই মুহুর্তে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শিঘ্র অভিযান পরিচালনা করা হবে।প্রশাসনের কেউ অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মরত কারও কাছে কোনো ব্যবসায়ী যদি খরছের টাকা পান তাহলে অিভিযোগ পেলে সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি