অবশেষে এমসি’র মাঠ থেকে পশুর হাট প্রত্যাহার হচ্ছে!

সিলেট ডায়রি ডেস্ক ;
  • প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২০, ৭:২৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৫ বছর আগে

করোনাকালিন মহামারির মধ্যে সিলেটে কোরবানির হাট বসানো নিয়ে শহরজোড়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। সিসিকের পক্ষ থেকে তিনটি জায়গার নাম ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে হাট বসানো থেকে সরে আসে সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু প্রতিবাদ থাকা সত্তে¡ও সরকারি এমসি কলেজের মাঠে গরুর হাটের ইজারা দেয়া হয়। যদিও ইজারা দেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই হাট বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিলো। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে থেমে আছে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত। এরইমধ্যে এমসি কলেজের মাঠ থেকে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য জেলা প্রশাসক, সিটি কর্পোরেনের মেয়র, মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ পাঁচটি দফতরকে চিঠি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ এই চিঠি প্রেরণ করেন। চিঠি প্রাপ্তির কথাও স্বীকার করেছেন সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
এমসি কলেজের মাঠকে কোরবানির জন্য পশুর হাট হিসেবে ইজারা দেয়ার পর থেকে আন্দোলনে মাঠে নামে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও মাঠের গেইটে তালাসহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। এখনও আন্দোলন চলমান রয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হোসাইন আহমদ জানান, মাঠ থেকে পশুর হাট প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। এদিকে, ২০নং ওয়ার্ডবাসী ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবরও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মাঠ থেকে পশুর হাট প্রত্যাহারের আন্দোলন ও কলেজের অধ্যক্ষের চিঠির প্রেক্ষিতে আজ দুপুরে সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসক যৌথ সভায় পুন:রায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।
কলেজ মাঠ থেকে পশুর হাট সরানোর জন্য জেলা প্রশাসক, মেয়র, পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ। তিনি জানান, সোমবার বিভাগীয় অফিসে আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এমসি কলেজের মাঠ থেকে পশুর হাট সরানোর বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। এরপর মাঠ থেকে পশুর হাট প্রত্যাহারের বিষয়ে মেয়রের কথার প্রেক্ষিতে আমি মঙ্গলবার মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসক মহোদয় এমসি কলেজের মাঠ থেকে পশুর হাট বসানো সিদ্ধান্তকে পুন:বিবেচনা করবেন।


চিঠিতে কলেজের অধ্যক্ষ উল্লেখ করেছেন, করোনকালিন কঠিন সময়কে বিবেচনায় রেখে কলেজের মাঠটি শর্তসাপেক্ষে পশুর হাট হিসেবে ব্যবহারে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল সম্মতি প্রদান করেন। সেই মোতাবেক পরবর্তি আদেশ প্রাপ্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে অবহিত করা হয়। মাঠটি পশুর হাট হিসেবে ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর অসম্মতি ও তীব্র অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।
তিনি চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, কলেজ ছাত্রাবাসের কক্ষসমূহ আবাসিক হওয়ায় পশুর হাটটি মাঠে স্থাপন করায় ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরী হতে পারে। পশুর হাট বসানো মাঠটি ছাত্রাবাসের সামনে হওয়ায় নতুনমাত্রায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে যা কোনভাবে কাম্য নয়।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সিলেটের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিগণ রাজনৈতিক সচেতন সাংস্কৃতিক কর্মী, মুরারিচাঁদ কলেজের দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ মাঠে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন যা মুরারিচাঁদ কলেজের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাবিষয়ক সার্বিক পরিস্থিতি সংঘাতময় করে তুলতে পারে। এরূপ প্রেক্ষাপটে কলেজ প্রশাসন তার প্রাক অনাপত্তিপত্রটি প্রত্যাহার করছে এবং মাঠে পশুর হাট না বসানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছে।
এই চিঠির প্রেক্ষিতে এমসি কলেজের মাঠে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত পুন:বিবেচনা করছে বলে জানায় সিটি কর্পোরেশন। আজ দুপুরে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান পাওয়া যাবে। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং সচেতন নাগরিক সমাজ এমসি কলেজের মাঠ থেকে কোরবানির জন্য পশুর হাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন।

সূত্র- একাত্তরের কথা

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি