সব
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং এগারো দফা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্বাধীকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন করে সতের হাজার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহনে এবং বাংলাদেশ বিজয় লাভে ভূমিকা পালন করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টে জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যার পর বিচারের দাবীতে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আন্দোলন। ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন। ১৯৯৬ সালে দুখী বাঙ্গালীর ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জোট সরকারের আমলে বিভিন্ন দুঃশাসন গণতন্ত্র হরনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম এবং পরবর্তী সেনা সমর্থিত সরকার কতৃক বিশ্বরত্ন শেখ হাসিনা’র কারামুক্তির মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অগ্রণী ভূমিকা অনুপ্রবেশকারী সুবিধাভোগীদের কারণে আজ রাজপথে বিলীন হতে চলেছে।ছাত্রলীগের ইতিহাস মানে বাঙ্গালীর ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস মানে বাংলাদেশের অর্জিত সম্মান সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস।তা ভুলে গেলে বাকি রয়?
আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন গর্বিত সাবেক কর্মী হিসাবে বলতে চাই। আজকের আওয়ামী লীগে অধিকাংশ নেতৃস্থানীয় শীর্ষ নেতারাই ছাত্রলীগ করেই এপর্যন্ত পদবীধারী এমপি এবং মন্ত্রী পদেও আসীন হয়েছেন। উনাদের মাঝে অনেকের বাংলাদেশের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রক্ত ঘাম জেল জুলুম ত্যাগ জড়িত তা বাঙ্গালী জাতি হিসাবে শ্রদ্ধাভরে স্বীকার করছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলার জনগণের আস্থা অর্জন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে এরপর থেকে দলের শীর্ষ আওয়ামী লীগের নেতারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের আত্মত্যাগ রক্ত ঘাম জেল জুলুম সহ বিভিন্ন নির্যাতনের স্বীকার পরবর্তী অর্জিত গণতন্ত্র এবং উনাদের শীর্ষ পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করে রাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীদের ত্যাগ এখন রাজপথেই বিলীনের পর্যায়। একমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র কন্যা বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী বিশ্বরত্ন শেখ হাসিনা ছাড়া এখনকার প্রায় অনেক শীর্ষ নেতারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ত্যাগ এবং অর্জন স্বীকার করতে প্রায় নারাজ। তবুও ছাত্রলীগের দেখভাল একমাত্র শেখ হাসিনাই করে থাকেন নতুবা সারাবছর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অজস্র নেতা-কর্মী বিভিন্ন সময় বিপদে পড়ে শীর্ষ স্থানীয় নেতা কয়জনইবা খবর রাখেন? কেউই খবর রাখেনা।
আজকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রশ্ন রাখতে চাই!
নীতি-নৈতিকতায় আপোষহীন এবং দেশ ও দশের কল্যাণে নিবেদিত অনেক ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান মেধাবী নেতা-কর্মী আছে যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় জাতিরপিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কে সুসংগঠিত করতে আত্মত্যাগ রক্ত ঘাম জেল জুলুমের স্বীকার এবং প্রিয় নেতাদের দলের শীর্ষ স্থানে পৌছানোর জন্যে উনাদের রাস্তা প্রশস্ত রাখতে গিয়ে নিজের পরিবার পরিজন বিসর্জন অতঃপর নিজের আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনষ্ট করেছে তাদের পরিবার আজ অসহায় কর্মহীন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেধাবী হওয়া সত্যেও একটি চাকুরী পায়না মেধাবী ছাত্রলীগ নেতা প্রিয় নেতাদের রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে ও প্রাণের সংগঠন কে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে রূপান্তরিত করতে গিয়ে সাধারণ জনগণের কাছে গণতন্ত্রের মুক্তির বার্তা পৌছে দিতে বলির পাঠা হয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে শক্তির পাঞ্জা লড়ে।অতঃপর উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ সংগঠন যৌবনের প্রথম প্রেম প্রথম আবেগ অনুভূতি আর ভালাবাসা মিশেথাকা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি পদবীর আশায় শীর্ষ নেতাদের উস্কানিতে উনাদের বলয় সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গ্রুপ উপগ্রুপের মধ্যে লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরণের ভুয়া বানোয়াট মামলা মকদ্দমায় জড়িয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের আলোর প্রভাত নিবিয়ে দেয় কিন্তু আজকে তাদের স্থান কোথায় তাদের খবর কি কেউ রেখেছেন?
আজকে শীর্ষ স্থানীয় নেতা-এমপি-মন্ত্রীদের পাশে সুবিধাভোগী অনুপ্রবেশকারী এরা কারা?
আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,সেচ্চা সেবক লীগ, শ্রমিক লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে আসীন যে নেতারা এরা কারা?
-সাহেদ করিমের মতো আওয়ামী লীগ-যুবলীগে অজস্র লোক আছে এরা কারা?
-এদের কে কারা অনুপ্রবেশ করিয়েছে?
-দলের পদ-পদবী প্রদান কিসের ভিত্তিতে করে থাকেন?
-এদের বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কি ভূমিকা ছিলো?
-আজকে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের কমিটি গুলায় ছাত্রলীগ করে আসা সাবেক নেতা কর্মীদের পদায়ন না করে সে যায়গায় ব্যবসায়ী এবং কোনদিন ছাত্রলীগ করেনি অথবা বাংলাদেশের এপর্যন্ত কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাদের কোন সম্পৃক্ততা ছিলোনা তাদের কে পদবী দেওয়া হয় কোন যোগ্যতা বলে?
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বিশ্বরত্ন শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হতে চলেছে কিন্তু ১৯৭১ সাল পরবর্তী সময় থেকে ও আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতাসীন হয়েছে সুবিধাভোগী স্বার্থান্বেষী লুটেরাজরা আওয়ামী লীগের স্বার্থান্বেষী নেতাদের হাত ধরে অনুপ্রবেশ করে দলীয় পরিচয়ে লুটে খেয়ে দেশেবিদেশে বাড়ী গাড়ী সহ সম্পদের পাহাড় জমিয়ে শুধু নিজের আখের গুছিয়েছে দলের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে যার বাস্তব প্রমাণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক উপকমিটির সদস্য সাহেদ করিম যার সাথে বাংলাদেশের এমন কোন বড় নেতা বা অফিসার নেই যে তার সাথে সম্পর্ক নেই সূত্র শুধু একটাই স্বার্থান্বেষী লোভী কোন একজন নেতা যার বদৌলতে অনুপ্রবেশ করেছে আওয়ামী লীগে। যেখানে ছাত্রলীগের সাবেক কোন নেতা স্থান পায়না সেখানে সাহেদ’দের মতো লোক স্থান পায়,যেখানে এমপি-মন্ত্রীর পাশে প্রটোকলে ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান নেতা-কর্মী থাকার কথা সেখানে দেখা যায় অনুপ্রবেশকারী ও ব্যবসায়ী মহলের লোক আপন হয়ে পাশে রয়েছে,যেসব ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী দিনরাত পরিশ্রম করে রক্ত ঝরিয়ে এমপি-মন্ত্রী পদে আসীন করে আজ ঐসব এমপি-মন্ত্রীর পাশে গিয়ে একটি ছবি তুলতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ধাক্কা খেতে হয় অনুপ্রবেশকারী নেতা এবং ঐসব স্বার্থান্বেষী ব্যবসায়ীদের হাতে তখন আবার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর উল্টো ক্ষ্যাপে উঠেন বিব্রত হোন এমপি-মন্ত্রী মহোদয়। অনুপ্রবেশকারীদের বিড়ে আজ হারিয়ে যাচ্ছে দলের নিবেদিত প্রাণ। তাই গ্রুপ-উপগ্রুপ কোন বলয়ের নেতা ছাড়া দলের নিরপেক্ষ টিম দিয়ে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুদ্ধি অভিযান চালালে এরকম হাজারো সাহেদ করিমের মতো অনুপ্রবেশকারী বেরিয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
সামাজিক কর্মকাণ্ডের ভিতর দিয়ে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন উত্তম মানুষ বা সমাজ বিনির্মাণকারীর জন্ম হয়। ঠিক তেমনিভাবে যারা সমাজকে ধ্বংস করে,কলুষিত করে,দূর্নীতি করে, প্রতারণা করে,স্বেচ্ছাচারিতায় নিমজ্জিত থাকে,তাদেরকে ও সমানভাবে এ সমাজ থেকে উচ্ছেদ করতে হবে, না হলে এ সমাজ বা দেশ এগোবার পথ হারিয়ে ফেলবে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নক্ষত্র মাহবুবুল হক শাকিল ভাই লিখেছিলেন –
“ক্ষমতার রাজনীতিতে প্রতারকরা চাটুকার সাজে,
ত্যাগীরা বুক পকেটে বিরহ নিয়ে হাটে। ”
তাই আসুন সংগ্রামীরা,আর বিরহ নয়,মুজিব শতবর্ষে দূর্নীতিবাজদের খতম করি, প্রতারক,চাটুকারদের উচ্ছেদ করি।শোষণ হীন সোনার বাংলা বিনির্মানে এগিয়ে যাই।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বিশ্বনেত্রীর ভিশন, যেতে হবে বহুদূর এখন যে আমাদের মিশন। এগিয়েছি এগিয়ে যাবো রয়েছে বাকি অনেকটা পথ, পিতা মুজিবের স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার আজ নিয়েছি আমরা শপথ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
কামাল উদ্দিন
সাবেক সহ-সভাপতি
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সিলেট মহানগর।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি